বার্সেলোনা ছাড়বেনই- এটাই এখন যেন ধনুর্ভঙ্গ পণ লিওনেল মেসির। গত মঙ্গলবারই আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে বার্সেলোনা সভাপতি হোসে মারিয়া বার্তেম্যুকে জানিয়ে দিয়েছেন নিজের ইচ্ছার কথা।
এতদিন যা গুঞ্জন ছিল, সেটা যখন সত্য হিসেবেই প্রতীয়মান হচ্ছে, তখন প্রচণ্ড তোলপাড় বার্সেলোনার অভ্যন্তরে। ন্যু ক্যাম্পের সামনে সমর্থকনা বিক্ষোভ পর্যন্ত করেছেন। মেসিকে যেতে দিতে চান না তারা। বার্সা কর্মকর্তারাও ছাড়তে রাজি নন মেসিকে।
এমনকি মেসিকে ন্যু ক্যাম্পে ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও রাজি বার্সা প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া বার্তেম্যু। বার্সেলোনার প্রেসিডেন্টের পদই ছেড়ে দিতে চান তিনি। তাতেও যদি মেসির মন গলে, থাকতে রাজি হন বার্সায়!
কিন্তু হোসে মারিয়া বার্তেম্যুর এই ঘোষণায়ও মন গলেনি ক্লাবটির আর্জেন্টাইন অধিনায়কের। বার্সার পক্ষ থেকেই শুক্রবার জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো কিছুই আর ক্লাবকে বলেননি মেসি।
বার্সা প্রেসিডেন্ট বার্তেম্যু জানিয়েছেন, যদি মেসি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই বলেন যে, তার ক্লাব ছাড়তে চাওয়ার পেছনের বড় কারণ হচ্ছেন তিনি, তাহলে হাসিমুখেই প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দেবেন।
তবে, ফুটবলের বিখ্যাত ওয়েবসাইট গোলডটকম জানাচ্ছে, মেসি কোনোভাবেই সম্ভবত আর তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না। তিনি বার্সা ছেড়েই যাবেন। তবে কিভাবে বার্সা ছাড়বেন- এসব বিষয় নিয়ে খুব শিগগিরই ক্লাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান তিনি।
১৩ বছর বয়সে লা মাসিয়া থেকে শুরু মেসির ক্যারিয়ার। এখন তার বয়স ৩৩। প্রায় ২৯টি বছর কাটিয়ে দিয়েছেন ন্যু ক্যাম্পে। সুতরাং, ক্লাব ছাড়ার সময় সম্পর্কটা খারাপ করে যেতে চান না তিনি। এ কারণে, যাতে একটা সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে বার্সা ছেড়ে যেতে পারেন- সে জন্যই তিনি একটা বৈঠকে বসতে চান ক্লাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
গোল ডটকম জানাচ্ছে, মেসি ক্লাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাওয়ার একটা কারণ আছে। সেটা হচ্ছে, তিনি তার রিলিজ ক্লজটাকে কার্যকর করে চুক্তি বাতিল করতে চান। তাতে তিনি বার্সা থেকে যে কোনো ক্লাবেই ফ্রি চলে যেতে পারবেন। তার সঙ্গে রিলিজ ক্লজসহ যে চুক্তি ছিল, সেটার মেয়াদ মূলতঃ সদ্য সমাপ্ত মৌসুমেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে চুক্তির মেয়াদ অটোমেটিক্যালি বেড়ে গেছে একটি বছর।
তবে মেসির আইন বিষয়ক উপদেষ্টারা বলছেন, এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯-২০ মৌসুমে। করোনার কারণে সেটা হয়তো এক বছর বেড়ে গেছে। সুতরাং, এখন চাইলেই মেসি এক বছর আগে চুক্তি বাতিল করে দিতে পারে বার্সার সঙ্গে। গোল ডটকম বলছে, এ বিষয়টা নিয়ে দেন-দরবার করার জন্যই বার্সার সঙ্গে বৈঠক করতে চান।